সোমবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২২

গল্প: সাইকোপ্যাথ ( পর্ব ৪ )

আরিয়ান হঠাৎ করেই তাসনুভাকে ওর বাসায় নিয়ে এসেছে। তাসনুভার কেন জানি অনেক সন্দেহ হচ্ছে। ওর মন বলছে, আরিয়ান ওর সাথে খারাপ কিছু একটি করার প্ল্যান করছে। কারণ তাসনুভা জানে আরিয়ান কেমন। ওর বুকের ভিতরটা এসব অজানা ভয়ের জন্য ধুকপুক ধুকপুক করছে।

আরিয়ান গাড়ি পার্ক করে বলে,

- এখানে চুপচাপ বসো। আমি একজনকে পাঠাচ্ছি। তার সাথে চলে এসো।
~ আমাকে কেন এখানে এনেছেন? আমি বাসায় যাবো। প্লিজ আমাকে বাসায় দিয়ে আসেন।
- তাসনুভা....(চোখ গরম করে)
এই বলেই আরিয়ান আগে নেমে পড়ে৷ তাসনুভার হৃদস্পন্দন ক্রমশ বেড়েই যাচ্ছে৷ কি হতে যাচ্ছে ওর সাথে? মাথার ভিতর অনেক কিছু ঘুরপাক খাচ্ছে। হঠাৎই গাড়ির জানালায় কে যেন নক দিয়ে দরজাটি খুলে। তাসনুভা তাকিয়ে দেখে একটি সুন্দরী মেয়ে। তাসনুভাকে দেখে সে খুব কষ্টে হাসি চেপে আছে। তাসনুভা তা বেশ বুঝতে পারছে। ও একটু ভালো করে খেয়াল করে দেখে মেয়েটিকে কেমন চেনা চেনা লাগছে৷ হ্যাঁ ও এই মেয়েটিকে পার্টিতে আরিয়ানের সাথে দেখেছিল। কিন্তু নামটি ঠিক মনে আসছে না ওর৷ তাসনুভার চিন্তায় ব্যাঘাত ঘটিয়ে মেয়েটিই নিজ থেকে বলে উঠে,
~ হ্যালো ম্যাম৷ আমি নাতাশা। স্যারের পার্সোনাল সেক্রেটারি। আপনি এটা দিয়ে মুখটি ঢেকে আমার সাথে আসুন।
নাতাশা তাসনুভার দিকে একটি স্ক্রাফ এগিয়ে দেয়। তাসনুভা সেটি দিয়ে দ্রুত মুখ ঢেকে নেয়৷ তারপর গাড়ি থেকে নেমে নাতাশার সাথে আরিয়ানের বাড়ির ভিতরে যেতে থাকে। তাসনুভা এত বড়ো আধুনিক ডিজাইন করা বাড়ি শুধু নেটেই দেখেছে। আজ নিজ চোখেও দেখে নিচ্ছে। ওর চোখেমুখে বিষ্ময়ের ছাপ স্পষ্ট। নাতাশার সাথে যেতে যেতে তাসনুভা ভয়ে ভয়ে বলে,
~ আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?
~ আমার রুমে ম্যাম।
~ কেন!
~ কেন আবার আপনার এই সুন্দর মেকাপ তুলার জন্য৷ স্যার ত তার রুমে আপনার ছবি দেখে হাসতে হাসতে শেষ হয়ে যাচ্ছে। সে বলেছে দ্রুত মেকাপ তুলে আপনাকে সুন্দর করে সাজিয়ে দিতে।
~ আপনার স্যার অনেক খারাপ।
~ তা তো অবশ্যই। হাহা।
নাতাশা তাসনুভাকে ওর রুমে নিয়ে এই হাস্যকর মেকাপ তুলে ফেলে। তাসনুভা তোয়ালে দিয়ে ওর মুখ মুছে ফেললে নাতাশা ওর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। তাসনুভা কিছুটা লজ্জা পেয়ে লজ্জাসিক্ত কণ্ঠে বলে,
~ এখনো কি কিছু লেগে আছে?
~ না না। একদম পরিষ্কার।
~ তাহলে এভাবে তাকিয়ে আছেন যে?
~ আসলে ভাবছি, স্যার ঠিকই বলেছেন। আপনি সত্যিই অনেক সুন্দরী। একটি আলাদা মায়া আর মমতা আছে আপনার চোখে মুখে।
তাসনুভা লজ্জা লাল হয়ে যায়৷ নাতাশা হাসি দিয়ে বলে,
~ ইসস! লজ্জা পেতে হবে না৷ আচ্ছা আপনি এভাবে আপনার সুন্দর মুখখানায় এরকম আজব মেকাপ কেন করেছিলেন?
তাসনুভা মাথা নিচু করে আছে৷ কিছু বলছে না। নাতাশা হাসি দিয়ে বলে,
~ আমি জানি, স্যার যাতে আপনার থেকে দূরে সরে যায় তার জন্য তাই না? হাহা৷ এটি কখনোই সম্ভব না৷ স্যার একবার যেটি মনে মনে ঠিক করেন সে ঠিক সেটিই করে ছাড়েন৷ কোনকিছুই মানেন না৷
~ কিন্তু কেন? আমার ইচ্ছা, চাওয়ার কি কোন গুরুত্ব নেই তার কাছে? আমার তো তাকে একটুও ভালো লাগে না৷ তাহলে কেন সে আমার কাছে আসবে? আর একটি মেয়ে যে কিনা একটি ছেলেকে একটুও পছন্দ করে না সে যদি বারবার তাকে স্পর্শ করে তার সাথে উলটা পালটা কাজ করে তাহলে কেমন লাগবে বলেন তো? আপনার স্যার একটি সাইকো। সাইকো না সাইকোপ্যাথ সে।
~ আচ্ছা আচ্ছা বুঝেছি বুঝেছি। শান্ত হন৷ বাব্বাহ! এত রাগ স্যারের উপর। স্যার জানলে যে কি হবে কে জানে।
তাসনুভা এবার ভয়ে চুপসে যায়৷ ও আস্তে করে বলে,
~ প্লিজ আপনি আবার এগুলা ওনাকে বইলেন না।
~ ওকে। বাট একটি শর্তে।
~ কি শর্ত?
~ এখন সুন্দর করে সেজে স্যার যা বলে তাই তাই করবেন। তাহলে আর বলবো না।
তাসনুভা বাকরুদ্ধ হয়ে নাতাশার দিকে তাকিয়ে আছে। ও মনে মনে বলে,
~ যেমন স্যার তেমন তার সেক্রেটারি। এদের কাছ থেকে কোন ভালো কিছু আশা করাই ভুল।
তাসনুভা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে,
~ ঠিক আছে রাজি আমি।
তাসনুভা সম্মতি দিলে নাতাশা ওকে সুন্দর করে সাজিয়ে দেয়৷ আর একটি দামী ড্রেসও পরিয়ে দেয়। তাসনুভা জিজ্ঞেস করে,
~ ড্রেসটি পেলেন কোথায়?
~ স্যার ম্যাসেজ করেছিল। তাই আপনি আসার আগেই এনে রেখেছিলাম।
তাসনুভা শুধু অবাকই হচ্ছে৷ আরিয়ান যে কতটা ফাস্ট তা ওর বোঝার বাইরে। নাতাশা মনের মাধুরি মিশিয়ে তাসনুভাকে সাজিয়ে দেয়৷ তাসনুভা নিজেকে দেখে নিজেই অবাক৷ কারণ ওকে অপ্সরাদের মতো সুন্দরী লাগছে। নাতাশা বলে উঠে,
~ ইসস! কারো নজর না লাগুক।
~ কারো না লাগলেও আপনার স্যারের অবশ্যই লাগবে৷
~ হাহা৷ তা ঠিক বলেছেন৷ অবশ্য হবু স্বামীর নজর লাগা আর না লাগা সমান৷ হাহা।
~ ওনাকে আমি কখনো বিয়ে করবো না৷
~ তাই? আমি যদি বলি একদিন আপনিই ওনাকে বিয়ে করার জন্য পাগল হয়ে যাবেন।
~ এটি অসম্ভব।
~ হাহা দেখা যা....
হঠাৎই নাতাশার ফোনে ম্যাসেজ আসে। নাতাশা কথা শেষ না করেই ম্যাসেজ দেখে একটি রহস্যময় হাসি দেয়৷ আর বলে,
~ চলুন ম্যাম স্যার আপনার জন্য অপেক্ষায় আছে। আপনাকে দেখতে চায়।
~ জি চলুন।
তাসনুভা বাধ্য হয়ে নাতাশার সাথে যেতে থাকে। ও ভেবেছে আরিয়ান নিচে হল রুমে অপেক্ষা করছে। কিন্তু নাতাশা ওকে নিয়ে যায় আরিয়ানের রুমের সামনে। তাসনুভা বলে,
~ এটি কার রুম?
~ কেন স্যারের। যান ভিতরে যান৷ স্যার কিন্তু অপেক্ষা করছে।
~ অসম্ভব! আমি ভিতরে কেন যাবো? কখনো না।
~ তাহলে কিন্তু স্যারকে বলে দিব সব৷
তাসনুভা অসহায় ভাবে নাতাশার দিকে তাকিয়ে আছে। নাতাশা মিটমিট করে হাসি দিয়ে বলে,
~ আরে হবু জামাইয়ের কাছে যেতে এত সংকোচ করতে নেই। যান যান।
~ আপনি একটি মেয়ে হয়ে আরেকটি মেয়ের সর্বনাশ করছেন?
~ যেতে বলেছি ভিতরে। গেলেই বুঝবেন।
তাসনুভা আস্তে আস্তে দরজা ঠেলে আরিয়ানের রুমে ঢুকে। বিশাল বড়ো রুম। ও রুমে ঢুকে দেখে আরিয়ান দাঁড়িয়ে আছে জানালার কাছে৷ নাতাশা পিছন থেকে আবার দরজা লাগিয়ে দিলে আরিয়ান পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখে তাসনুভা দাঁড়িয়ে আছে৷ ও একটি মুচকি হাসি দিয়ে দ্রুত তাসনুভার কাছে চলে আসে। এসে ওর হাত দুটো ধরে ওকে মন ভরে দেখতে থাকে। কিছুক্ষণ দেখে আরিয়ান বলে,
- বাহ! একদম বউ বউ লাগছে তোমাকে। নতুন বউ আর কি। আর এতক্ষণ যা লাগছিল না হাহা।
তাসনুভার চোখে মুখে ভীষণ ভয়। ও কোন কথাই বলতে পারছে না। ও শুধু মাথা নিচু করে আছে। কেন জানি ওর খুব খারাপ লাগছে। এসব ভালো লাগছে না ওর। ও মাথা নিচু করে আছে বলে আরিয়ার ওর থুতনিতে হাত দিয়ে মুখটি ওর দিকে তুলে ধরে। ওরা দুজন এখন দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে৷ তাসনুভার খুব অস্বস্তি লাগছে৷ আরিয়ান ওর গোলাপি ঠোঁটটির দিকে তাকিয়ে আছে৷ তাসনুভা কাঁপা ঠোঁটে বলে,
~ আমার এসব ভালো লাগছে না। আমি ওই ধরনের মেয়ে না। প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন৷
- তুমি রিহানের জন্য আমাকে পছন্দ করছো না? যে কয়েকটি টাকার জন্য তোমাকে ছেড়ে দিয়েছে তার জন্য তুমি আমাকে ফিরিয়ে দিচ্ছো?
~ আপনার জন্য উনি এমন করেছেন। আপনি ইচ্ছা করেই এই গেইমটা খেলেছেন। আপনার জন্য আমার জীবন তছনছ হয়ে যাচ্ছে। আমার স্বাধীনতা সব শেষ। শুধু আপনার জন্য৷ জোর করে এই দেহটিই পাবেন আমার মনকে না। আপনার তো একটি মেয়ের দেহ দরকার তাই না? তাহলে টাকা দিয়ে তো অনেক মেয়ের দেহ পেতে পারেন। আমাকে মুক্তি দিন না প্লিজ। আমার চেয়ে আরো অনেক সুন্দরীর দেহ আপনি চাইলেই পাবেন৷ আমাকে আর কষ্ট দিয়েন না এভাবে৷ (তাসনুভার চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে)
তাসনুভা খেয়াল করে আরিয়ানের চোখগুলো রক্তের মতো লাল হয়ে আছে। আর কপালের রগ দুটো একদম খাড়া হয়ে আছে। তাসনুভা খুব ভয় পাচ্ছে। মনে মনে ও বলছে, এবার বোধহয় আর রক্ষা নেই৷ আরিয়ান কিছু না বলে আচমকা ওর ঠোঁটটি কামড়ে দেয় অনেক জোরে। তাসনুভা যেমন অবাক হয় তেমন ব্যথাও পায়৷ ওর হাত দিয়ে আরিয়ানকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে। কিন্তু পারে না। আরিয়ান ওর ঠোঁটটিকে নিয়ে যা করছে না তা বলার বাইরে। তাসনুভা আর না পেরে আরিয়ানের পেটে একটি জোরে ঘুষি মারে। ওমনি আরিয়ান ওকে ছেড়ে দিয়ে বলে,
- ওরে বাবারে...এত শক্তি তোমার?
তাসনুভা ওর ঠোঁটে হাত দিয়ে কাঁদতে থাকে। আরিয়ান ওকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে ওর চোখে চোখ রেখে বলে,
- তোমার দেহের উপর আমার লোভ থাকলে তোমাকে বিয়ে করতে চাইতাম না। কারণ তোমাকে ধর্ষণ করা আমার হাতের মোয়া ছিল৷ কিন্তু আমি সেটি করি নি। কারণ আমি তোমাকে পছন্দ করেছি সারাজীবনের জন্য। বিয়ে করতে চেয়েছি। বিয়ে মানে বুঝো? সারাটি জীবন তোমাকে আমার কাছে রাখার প্রতিজ্ঞা। তোমার সব দায়িত্ব পালনের প্রতিজ্ঞা। আর তুমি বলতেছো আমি তোমার দেহের জন্য তোমার কাছে? হ্যাঁ আমি লোভী। তবে শুধু তোমাকে পাওয়ার জন্য৷ সারাজীবনের জন্য৷
বলেই আবার তাসনুভাকে জড়িয়ে ধরে ওর ঠোঁটটিকে নিজের করে নেয় আরিয়ান৷ আসলে ওর অনেক রাগ উঠেছে৷ ওর নিজের উপর নিজের কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলেছে৷ তাসনুভার উপর রাগটি ও এভাবে ঝারছে। তাসনুভা শুধু কাঁদছে। হঠাৎই বাইরে গোলাগুলির শব্দ হয়৷ আরিয়ান মুহূর্তেই তাসনুভাকে ছেড়ে জানালায় গিয়ে তাকায়। দেখে বডিগার্ডরা গুলি করছে বাইরের শত্রুদের। আরিয়ান দ্রুত ওর দুইটি পিস্তল বের করে লোড করে ফেলে। তাসনুভা কিছুই বুঝতে পারছে না৷ ওদিকে বাইরে সমানে গুলির শব্দ হচ্ছে৷ তাসনুভা এবার খুব ভয় পাচ্ছে। আরিয়ান তাসনুভার কাছে এসে বলে,
- ভয় নেই। আমি থাকতে তোমার কিচ্ছু হবে না৷
আরিয়ান কথা শেষ করার আগেই ওর রুমের দরজায় জোরে জোরে কে যেন বাড়ি দিতে থাকে। আরিয়ান তাসনুভাকে পাশে সরিয়ে জিজ্ঞেস করে,
- কে?
~ স্যার আমি নাতাশা।
আরিয়ান সেকেন্ডের মধ্যে দরজা খুলে দেয়৷ নাতাশা রক্তাক্ত হাত নিয়ে রুমে ঢুকে। আরিয়ান অস্থির হয়ে বলে,
- নাতাশা বোন আমার কি হয়েছে তোমার? গুলি লাগলো কিভাবে?
~ স্যার দ্রুত এখান থেকে বেড়িয়ে পড়েন। নাহলে আপনাকে বাঁচাতে পারবো না৷ অনেক বড়ো শত্রুর দল অ্যাটাক করেছে। আমাদের অনেক বডিগার্ড অলরেডি শেষ। স্যার দ্রুত ম্যামকে নিয়ে পালান৷ ওরা আপনাকে মারতে এসেছে৷
- আমার বাঁচা মরা পড়ে। তোমাকে এখানে একা রেখে আমি কোথাও যাবো না। আমার একমাত্র বোন তুমি। তোমার কিচ্ছু হবে না৷
~ স্যার আমি ঠিক আছি। কিন্তু আপনি আর ম্যাম যান। নাহলে আমি নিজেকে কখনো মাফ করতে পারবো না।
নাতাশা ওর এক হাত চেপে ধরে বলে,
~ স্যার আর সময় নেই পালান এখন থেকে।
- তুমি আমার সাথে আসো।
তাসনুভা ভয়ে কাঁপছে৷ আরিয়ান ওর দিকে তাকিয়ে ওর এক হাত ধরে। আর অন্য হাত দিয়ে নাতাশাকে। এর পর ওদের নিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে পালাতে নিলে একটি শত্রু এসে ওদের সামনে দাঁড়িয়ে পড়ে৷ আরিয়ান কিছু করার আগেই শত্রুটি ওদের অবাক করে দিয়ে গুলি গুলো তাসনুভার দিকে ছুড়ে। নাতাশা মুহূর্তেই আরিয়ানকে সরিয়ে তাসনুভার সামনে এসে গুলি গুলা ওর পিঠের উপর নিয়ে নেয়। একে একে ছয়টি গুলি নাতাশার শরীরে ঢুকে যায়। আর সাথে সাথে ও শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে তাসনুভার সামনে। আরিয়ান জোরে চিৎকার করে ওর পিস্তল বের করে শত্রুকে গুলি করে ঝাঝরা করে দেয়। আরিয়ান নাতাশাকে জড়িয়ে ধরে অঝোরে কাঁদতে থাকে। তাসনুভা স্তব্ধ হয়ে আছে৷ ওর সামনে নাতাশার লাশ পড়ে আছে। একটু আগেও যে মেয়েটি ওকে সাজিয়ে দিয়েছিল। আর এখন সে নেই। রক্তে ভেসে গিয়েছে সব৷ আরিয়ানের কয়েকটি বডিগার্ড এসে বলে,
- স্যার আর একমুহূর্ত না৷ ম্যামকে নিয়ে আমাদের সাথে আসুন৷ নাহলে সব শেষ হয়ে যাবে৷
- আমার বোন নাতাশা.....(চিৎকার করে)
- স্যার উনি আর নেই। আসুন৷ তাসনুভা ম্যামকে বাঁচাতে হবে৷ ওরা উনাকে মারতে এসেছে। একজনকে ধরে জেনেছি।
এবার আরিয়ানের টনক নড়ে। ও তাসনুভার দিকে তাকিয়ে আবার নাতাশার দিকে একবার তাকিয়ে দ্রুত তাসনুভাকে নিয়ে বডিগার্ডদের সাথে যেতে থাকে। তাসনুভা নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না যে ওকে মারতে এতগুলো লোক এসেছে। বডিগার্ডরা ওদের দুজনকে ঘেরাও করে কোন মতে নিচে নিয়ে আসে। সেখানেও শত্রু কয়েকটি চলে আসলে আরিয়ানের বডিগার্ডরা ওদের দুজনকে বুলেট প্রুফ গাড়িতে বসিয়ে দিয়ে গোলাগুলি করতে থাকে। আরিয়ান কাঁদতে কাঁদতে গাড়ি নিয়ে পিছন দিক থেকে বেড়িয়ে পড়ে৷ ও কল্পনাও করেনি এমন দূর্বিষহ অবস্থায় ও পড়বে আর ওর সবচেয়ে মূল্যবান মানুষটিকে ও এভাবে হারাবে। আরিয়ান খুব কান্না করছে। তাসনুভা যেন নিথর হয়ে আছে৷ ওর পুরো শরীর শক্তিহীন হয়ে গিয়েছে। ওর মাথায় শুধু একটিই প্রশ্ন, কেন ওকে কেউ মারতে চাইবে? কেন?

লিখেছেন: আবির

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন